আগের পর্ব -
Click This Link
জাহানারা মুন্সী
উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। অসম্ভব ভালো পড়াতেন। সব বৈজ্ঞানিক নাম গড় গড় করে বলতে পারতেন। কোন বৈশিষ্ট্যের জন্য কোন উদ্ভিদ কোন দলের প্লেয়ার খুব সুন্দর করে সেটা বুঝিয়ে বলতেন।
এ বিভাগের আর কোন স্যার বা ম্যাডামের কথা মনে নেই।
সিরাজুল হক
প্রাণী বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান। একজন আত্মনিবেদিত শিক্ষক ছিলেন। প্রাণীর সব ঠিকুজী নখদর্পনে ছিলো স্যারের । খুব বেশী পাওয়ারের ভারী লেন্সের চশমা ছিলো তাঁর ট্রেডমার্ক।
এ বিভাগেরও আর কারো কথা মনে নেই।
এসকেসি
আমাদের কালে কলেজে স্যারদের নাম এরকম সংক্ষিপ্ত আকারে বলার প্রচলন ছিলো। সুবীর কুমার চক্রবর্তী (এসকেসি) ছিলেন পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক। তাঁর লেখা একখানা পদার্থ বিজ্ঞানের বই ছিলো। তবে একা লেখেননি। তাহেরা ম্যাডাম ছিলেন সহ-লেখক।
তাহেরা ম্যাডামকে আমরা পাইনি। তবে তাঁর সম্পর্কে একটা কিংবদন্তী শুনেছি। অনার্সের এক ছাত্রকে ভালোবেসে বিয়ে করে ফেলায় নাকি ম্যাডামকে ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বদলী করে দেয়া হয়েছিলো।
এসকেসি ছিলেন খুব ধোপদুরস্ত মানুষ। শুদ্ধ বাংলায় সুন্দর উচ্চারণে কথা বলতেন।
ক্লাসে একদিন পড়ালেন মহাকর্ষ বল আর অভিকর্ষ বল। পড়ানোর পর জানতে চাইলেন কারো কোন প্রশ্ন আছে কি না ? আমাদের এক মেধাবী সহপাঠী জুনাইদ প্রশ্ন করলো। আমাদের ব্যাচে এসএসসিতে কুমিল্লা বোর্ডে (বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগ ছিলো এর আওতায়। এখন সিলেট, কুমিল্লা আর চট্টগ্রামে আলাদা বোর্ড) মাত্র ২৪ জন স্টার মার্কস পেয়েছিলো। জুনাইদ ছিলো তাদের একজন।
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বাড়ি। প্রশ্ন করলো খাঁটি সিলেটী ভাষায়- আফনে যে ফড়াইলাইন মোহাখর্ষ বল আর অভিখর্ষ বল দুইডার বিতরে ব্যাশখম খিতা ?
এসকেসি তার কিছুই বুঝতে না পেরে আবার প্রশ্ন করতে বললেন। জুনাইদ আগের রেকর্ড আবার বাজালো। স্যার হতাশ হয়ে চুপ করে রইলেন। আমি দাঁড়িয়ে বললাম, অনুমতি দিলে আমি সাহায্য করতে পারি।
স্যার অনুমতি দিলেন। বললাম, প্রশ্নটি হলো, আপনি যে পড়ালেন মহাকর্ষ বল আর অভিকর্ষ বল এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য কি ? স্যার বললেন, তোমার বাড়ী কি সিলেট ? না, স্যার। নোয়াখালী। সারা ক্লাস চিৎকার করে উঠলো- রয়্যাল ! রয়্যাল !!
এ বিভাগেরও আর কারো কথা মনে নেই।
ফজলুর রহমান
ফজলুর রহমান স্যার ছিলেন রসায়নের বিভাগীয় প্রধান।
ব্যবহারিক রসায়ন নামে তাঁর লেখা একটি বই ছিলো বাজারে। পরে স্যার কুমিল্লা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হয়ে চলে যান।
আর কে কে রসায়ন পড়াতেন সেটাও যে মনে নেই !
পাদটীকা- তিতাস চৌধুরী ছদ্মনামে ভিক্টোরিয়া কলেজের এক স্যার ''অলক্ত'' নামের একটি উঁচুমানের সাহিত্য পত্রিকা বের করতেন। তিনি এখনো এ কাজটি করেন। প্রচুর লেখালেখি করেন।
আহসান হাবীব,শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ প্রমুখ বিখ্যাত কবি ''অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার'' পেয়েছেন। তাঁরা কুমিল্লা গিয়ে সে পুরস্কার গ্রহণও করেছেন। তিতাস চেীধুরীর আসল নাম কিংবা তিনি কোন বিভাগে পড়াতেন সেটা এখনো আমার জানা নেই।
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।