আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অখ্যাত আমার বিখ্যাত শিক্ষকেরা - ৬

আগের পর্ব - Click This Link পরেশ স্যার আমাদের ইংরেজী পড়াতেন পরেশ চন্দ্র সাহা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে অনার্স মাস্টার্স করেছেন। বেশ মোটা আর নাদুশ নুদুশ। ভুড়িটা ছিলো দেখার মতো। সাধারণের চেয়ে কিঞ্চিৎ লম্বা ও ফর্সা।

তবে পড়াতেন ভালো। স্যারকে আমরা পেলাম অবিবাহিত অবস্থায়। বেশ দেরীতে বিয়ে করেছেন স্যার। স্যারের বিয়েও আমাদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলো। তিনি বিয়ে করেছেন বিখ্যাত সুরকার সত্য সাহার ভাগ্নীকে।

সত্য সাহার সাথে তার ছেলে মাস্টার সুমন (সুমন সাহা) তখন বিভিন্ন সিনেমায় অভিনয় করে রীতিমতো তারকা। ছোট ভাই ইমন তখন আরো পিচ্চি। এখন ইমন নিজেই নামী সুরকার। সপরিবারে সত্য সাহা বিয়েতে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে সেটা বেশ গরম খবর হয়ে ওঠে চৌমুহনীতে।

পরেশ স্যারের ভুড়ি আমাদের মধ্যে আলোচিত ছিলো। স্যারের ক্লাসের প্রতি দুর্বলতা ছিলেন। বড়ো ক্লাসে হেড স্যারের ক্লাসের আগে পরেশ স্যার আমাদের ইংরেজীর ভিত তৈরী করেছেন। স্যারের বর্তমান অবস্থান জানা নেই। শহীদুল্লাহ হুজুর আমাদের ধর্মীয় শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন।

তরুন এ হুজুর ছিলেন খুব আমুদে লোক। সদা হাস্য মানুষ। পৃথিবীর সব কিছুকে কৌতুকের দৃষ্টিতে দেখার এক অসাধারণ ক্ষমতা ছিলো তাঁর। তবে নিজের কাজে ছিলেন চোস্ত। হাসি আনন্দের ভেতর দিয়ে পড়াটা ঠিকই সেরে দিতেন।

তাই হুজুরের ক্লাস করার জন্য সবাই মুখিয়ে থাকতাম। আরেকটা বিষয় ছিলো অন্য হুজুরদের মতো শুধু ধর্মীয় বিষয়ে সীমিত ছিলো না তাঁর পড়াশোনা। পত্রপত্রিকাসহ সিনেমা গান বিষয়েও হুজুরের ভালোই জানাশোনা ছিলো। মজা করে সেসব কথাও বলতেন। এখনো বেগমগঞ্জ স্কুলেই কর্মরত আছেন তিনি।

নির্মল কর স্যার আমাদের কালে প্রাথমিক বৃত্তি পাওয়া যেতো। কিন্তু জুনিয়র বৃত্তি ছিলো সোনার হরিণের মতো দুর্লভ। নির্মল কর স্যার ছিলেন সেই সোনার হরিণ ধরার জাদুকর। বেগমগঞ্জ হাই স্কুলে তিনি ছিলেন আরেক ''রুহুল আমিন স্যার''। বছরের শুরু থেকেই বৃত্তিওয়ালাদের পড়াতে শুরু করে দিতেন।

ছিলেন খুব কড়া। কিন্তু যে পড়ানোটা পড়ালেন ক্লাস এইটে তার ওপর ভর করে সহজ হয়ে যায় এসএসসির অনেক কিছুই। রুহুল আমিন স্যার আর নির্মল কর স্যারই তৈরী করে দিয়েছেন পড়াশোনার শক্ত ভিত। বাকী জীবনে অনেক কিছুই সহজে পার হয়ে গেছি সেই ভিত্তির ওপর ভর করে। স্যারের ছেলে অপু ( অপুর্ব কর) পরে আমার সহপাঠী হয়েছিলো।

স্যার বেগমগঞ্জ স্কুল ছেড়ে যান ভুল সময়ে। ফলে সরকারী করণের সুবিধাটা তিনি পাননি। এখনো বেঁচে আছেন। অবসর জীবন যাপন করছেন। (চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.