খিদমাহ একাডেমী
দুপুর ১২টায় গিয়ে উপস্থিত হলাম জনমত'র অফিসে। ফায়সাল ভাই ও মুসলেহ ভাই’'র সাথে বসে আলাপ করলাম দীর্ঘক্ষণ। মুসলেহ ভাই বললেন, আজ দুপুরে আমাদের সাথে খাবেন। আমি বললাম, আমি এইমাত্র খেয়েই এসেছি। চা খেয়ে নেবো।
ফায়সাল ভাই চা করে খাওয়ালেন। বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য একটি দুঃসংবাদ হলো, আজকাল ছেলেরা তাদেরচে’' অনেক ভাল চা বানাতে পারে। ফায়সাল ভাই’'র চা পান করে আমার তাই মনে হলো। ফায়সাল ভাইকে, মুসলেহ ভাইকে আমার গ্রন্থ প্রদর্শনী ও সাহিত্য আসরের চিঠি দিলাম। তারা বললেন, আমাদের দাওয়াত দিতে হবে কেন? আমরা তো আয়োজকদের মধ্যেই পড়ি।
আমি বললাম, তবুও। আপনাদের হেল্পটাইতো বেশি দরকার।
ফায়সাল ভাই বললেন, বলেন রশীদ ভাই, কী হেল্প করতে পারি।
বললাম, আপনি দীর্ঘ দিন একটি দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য বিভাগটি সফলভাবে পরিচালনা করে এসেছেন। সুতরাং একটি সাহিত্য প্রোগ্রাম সফল ও সুন্দর করতে হলে কী করতে হবে, সেই অভিজ্ঞতা তো আপনার অনেক বেশি।
হেসে ফেললেন তিনি। বললেন, প্রোগ্রামের আগে আমি আমার পত্রিকায় প্রোগ্রামকে নিয়ে একটি নিউজ করবো। প্রেস বিজ্ঞপ্তিও দেবো। অন্য পত্রিকাগুলোতেও নিউজ পাঠাবো। আমি আমার বন্ধু-বান্ধব কলিগ ও পরিচিতমহলকে ফোনে দাওয়াত করবো।
প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকবো সবাই মিলে। প্রোগ্রাম কভার করে পরের দিন সুন্দর করে নিউজ করবো। বলেন, আর কী করতে পারি?
আমি বললাম, আর কিছু করতে হবে না বরং আপনি যা বলেছেন, তারচে’' একটু কম করলেও চলবে।
বললেন, ব্যানার তৈরি হয়েছে?
আমি বললাম, এখানে ব্যানার-টেনার করা তো হেভি খরচের ব্যাপার। মাঝারী সাইজের একটি ব্যানার তৈরিতে ৪০/৫০ পাউন্ড লেগে যাবে, যা আমাদের বাংলাদেশে ৪/৫শ টাকারই হয়ে যেত।
এমনিতেই তাজুল ভাই আমার জন্য অনেক খরছ করে চলেছেন। হল ভাড়া, পত্রিকায় কোয়ার্টার পেজ বিজ্ঞাপন ইত্যাদি মিলিয়ে ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টাকার মতো খরছ করে ফেলেছেন। আমি তাকে বলেছি সাদা কাগজে হাতদিয়ে লিখে কিছু একটা খাড়া করে ফেলতে।
ফায়সাল ভাই এবং মুসলেহ ভাই দু’'জনেই বলে উঠলেন, কী বলেন! প্রোগ্রামের কোয়ালিটি মেন্টেনের একটা ব্যাপার আছে না?
তারপর ফায়সাল ভাই বললেন, ফোর কালার ডিজিটাল ব্যানার করতে হবে। ব্যানার নিয়ে আপনাকে ভাবার দরকার নেই।
মুসলেহ ভাই’'র প্রিন্টিং প্রেস ও নিজস্ব আর্টিস্ট আছে। ব্যানার তৈরি করার দায়িত্ব আমার।
বিলেতে দেশি বন্ধুদের এই আন্তরিকতার ঋণ আমি শোধ করবো কীভাবে??
আমি কথা বলছি তাদের সাথে, ঠিক তখনই তাজুল ভাই ফোন করলেন, বললেন, কোথায় আছেন?
জনমত অফিসে।
আপনি অফিসের সামনে থাকুন। দু’মিনিটের মধ্যেই আসছি।
আমি অফিস থেকে বেরিয়ে ২শ গজ মতন দূরত্বে ব্রিকলেনে চলে গেলাম। একটা পান খাওয়া দরকার। আমাদের বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী ২ মিনিট মানে ১০/১২ মিনিট তো হবেই। ৫ মিনিটের মধ্যেই একটি পান মুখে দিয়ে আয়েশী ভঙ্গিতে ফিরছি। তাকিয়ে দেখলাম তাজুল ভাই জনমতের সামনে গাড়ি নিয়ে খাড়া।
তিনি ঠিক দু’'মিনিটের মধ্যেই চলে এসেছেন। একেই বোধ'য় বলে ইংলিশ টাইম।
তিনি আমাকে নিয়ে ঘুরলেন ইউরোবাংলা, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ ও লন্ডন বাংলা পত্রিকা অফিসে। সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকা অফিসে দেখা হলো পত্রিকাটির সম্পাদক মোজাম্মেল হুসাইন কামালের সাথে। ইতিপূর্বে উনার কাছে কীভাবে জানি আমার বই পৌঁছে গেছে।
পরম মমতায় কাছে বসালেন তিনি। আন্তরিক ভাষায় কথা বললেন। দেশের খোঁজ খবর জানতে চাইলেন। বিশেষত মিডিয়া জগতের।
বিকেল ৫টা।
ইস্ট লন্ডন দৈনিক ব্রিটবাংলা অফিসে বসে আছি। ফোন করলেন আলহাজ্ব আতাউর রহমান। বললেন, আমি তোমার কন্ট্রাক্ট নাম্বার নাজির ভাইকে দিয়েছি। তিনি তোমার সাথে যোগাযোগ করবেন। তোমাকে নিয়ে আসবেন।
ফোন রাখতেই নাজির ভাই ফোন করলেন। একত্র হলাম আমরা, ইষ্ট লন্ডন মসজিদের সামনে। বাস নম্বার টুয়েন্টি ফাইভ চেপে চলে গেলাম খিদমায়। বাস থেকে নামার পর ফোন দিলাম আতাউর ভাইকে। খিদমাহ কার্যালয় ভিকারেজ লেনে।
আমাকে এগিয়ে নিতে আসলেন জামিল আনসারী। সিলেট জৈন্তার এই জামিল আনসারী’র সাথে দেশে থাকতেই পরিচয় ছিলো।
খিদমাহ একটি সামাজিক সংস্তা। বাংলাদেশের একজন কেখকের (!?) সাথে দেখা করবার জন্যে অনেকেই এসে জড়ো হয়েছেন। তাদের কয়েকজন হলেন, জৈন্তার মাওলানা নাজিম উদ্দিন, ওসমানীনগর খাদিমপুরের আলহাজ্ব আব্দুর রহিম, দয়ামির ইসামতির লুৎফুর রহমান, শামিম আহমদ, খিদমাহ মসজিদের ইমাম শেরপুরের মাওঃ আবুল কালাম প্রমুখ।
বাদ মাগরিব জমে উঠলো আড্ডা। আড্ডাকে জমিয়ে তুললেন নাজিম ভাই। এই ভদ্রলোক সব তরকারিতে নুন দিতে পারেন। হাতদিয়ে, চোখ দিয়ে কথা বলতে পারার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে তার। বডি ল্যাঙ্গুয়েজও চমৎকার।
খিদমায় অবস্থান করছে কয়েকজন তালেবুল ইলিম। স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে জড়ো হয়েছে। একজন একজন করে তাদের ধরে এনে নাজিম ভাই বসিয়ে দিলেন আমার সামনে। সাক্ষাৎকারের জন্য। আমার কাজ অনেক সহজ হয়ে গেলো।
প্রথমেই যে ছেলেকে নিয়ে বসলাম, তার নাম আরিফ-
...ক্রমশ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।