বিদেশে একখন্ড বাংলাদেশ
আজ ২৫শে মার্চ ২০১০ইং। ১৯৭১ এর ২৫শে মার্চের কালো রাতে বর্বর পাকিস্তানিরা নিরীহ নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালি জাতির উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলো হায়েনার মতো। যে কারণে পরের দিন ২৬শে মার্চ থেকে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার সংগ্রাম।
রেনেসাঁ সাহিত্য মজলিস যুক্তরাজ্যের সবচে’ পুরোনো এবং ঐতিহ্যবাহি সাহিত্য সংগঠন। ২৫ বছর ধরে বিলেতে বাংলা সাহিত্যের চর্চা করে আসছে সংগঠনটি।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ তারা আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের আসর। সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায় আমি ও তাজুল ভাই গিয়ে যোগ দিলাম সেই মজলিসে।
সংগঠনটির সভাপতি কে এম আবু তাহের চৌধুরী। আমাকে মঞ্চে নিয়ে গেলেন। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত একজন বড় লেখক (?) হিসেবে।
বিশেষ অতিথির আসনে বসিয়ে দেয়া হলো আমাকে। আবিষ্কার করলাম আমার পাশে বসে আছেন ঢাকা পোষ্ট পত্রিকার সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ওমর ফারুক।
অত্যন্ত উপভোগ্য এই সাহিত্য মজলিস চললো রাত ১১টা পর্যন্ত। বক্তৃতা হলো। স্বরচিত কবিতা পাঠ হলো।
দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হলো। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বিভিন্ন স্মৃতিচারণও করলেন কেউ কেউ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি ও কলামিষ্ট শিহাবুজ্জামান কামালের উপস্থাপনায় সেই আসরে উপস্থিত ছিলেন অর্ধশতাধিক বাঙালি কবি সাহিত্যিক ও সাংবাদিকরা। চ্যানেল আই, এনটিভিসহ কয়েকটি চ্যানেল’র প্রতিনিধিগণও।
উপস্থিত ছিলেন কবি রহমত আলী, মাওলানা রফিক আহমদ রফিক, কবি শেখ জাবেদ আলী, রেনেসাঁর সাহিত্য সম্পাদক মনোয়ার হুসেন বদরুদ্দোজা, মাদানী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাওঃ শামসুজ্জামান চৌধুরী, কবি ও কলামিষ্ট তাজুল ইসলাম, কবি মুজিবুল হক মনি, সাপ্তাহিক ইউরো বাংলার সিনিয়র সাংবাদিক বদরুজ্জামান, মোঃ রমিজ উদ্দিন, শাহাবুদ্দিন, রেনেসাঁর প্রচার সম্পাদক মোস্তফা জোবায়ের, আদিল মোঃ আরিফুর রহমান, কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নূর বকস, জবরুল আহমদ, শিক্ষাবিদ আব্দুল মালিক কুটি, শিব্বির আমিন সুমন, এডভোকেট আব্দুল মতিন, আবৃত্তিকার গোলাম জিলানী, সৈয়দ রফিকুল হক, আবুল হাসান চৌধুরী সহ আরো অনেকে।
প্রোগ্রাম শেষ করে বিদায় নিলাম সবার কাছ থেকে। রাত সাড়ে ১১টা বেজে গেছে। সালেহ হামিদী ভাই’র বাসায় রাতে খাবার দাওয়াত ছিল। তাজুল ভাই ফোনে স্যরি বলে দিলেন। বললেন, আজ তো অনেক দেরি হয়ে গেছে।
অন্যদিন খাওয়া হবে। সময় তো আছে।
বাসায় অনেক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে নিজাম ও মাহমুদ। মাহমুদ আছে অনেক দিন ধরে। তবে নিজাম ১৫ দিন হল যুক্তরাজ্যে।
রাত ১টা পর্যন্ত জমিয়ে আড্ডা হলো সকলে মিলে।
রাত ১টায় টেলিভিশন অন করলাম। প্রথমেই আমাদের স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহরের খবর। দেশে মাননীয় রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ অন্যরা শহীদ মিনারে ফুল দিচ্ছেন।
একটু পরেই দেখানো হলো হোয়াইট চ্যাপেল আলতাব আলী পার্কে নির্মিত শহীদ মিনারে মানুষের ঢল।
এ যেন বিদেশে একখন্ড বাংলাদেশ। রং বেরংয়ের ব্যানার নিয়ে হাজার হাজার বাঙালি গিয়ে জড়ো হয়েছেন সেখানে। আওয়ামীলীগ, বিএনপি, অন্যান্য দল, স্ব স্ব দলীয় ব্যানারে গিয়ে হাজির হয়েছেন ফুলের তোড়া নিয়ে। চলছে বক্তৃতা। স্লোগানও চলছে,-
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু,
লও লও লও সালাম।
স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া,
লও লও লও সালাম।
...চলবে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।