সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স
যৌনতা ও নগ্নতাকে বিট্রিশ কালচারের প্রতিশব্দ বললে মোটেও বাড়িয়ে বলা হবে না। অবাধ যৌনাচার যেদেশে স্বীকৃত, নগ্নতা যেখানে সৌন্দর্য, তেমন একটি দেশের অবস্থা কেমন হতে পারে, যে কেউ আন্দাজ করে বুঝে নিতে পারেন। ৩ ইঞ্চি + ২ ইঞ্চি + ২ ইঞ্চি, সমান ৭ ইঞ্চি পরিমাণ শরীর ঢেকে রাখলেই মেয়েকে সভ্য হিসেবে গণ্য করা যাবে।
ব্রিটিশ সভ্যতায় সেক্স হচ্ছে অনেকটা রুটিন ওয়ার্কের মতো। যার যাকে খুশি, যার যাকে পছন্দ অফার করছে।
হাত ধরে বেডে চলে যাচ্ছে। কার ছেলে, কার মেয়ে, অথবা স্ত্রী, কিছুই যায় আসে না। শুধু দেখার বিষয় দু'’জন সম্মত হয়ে বিছানায় যাচ্ছে কি না।
ঘটনা যদি উভয় পক্ষের সম্মতিতেই ঘটে, ঘটতে থাকে, যেমন ঘটছে অহরহ, প্রতিদিন, প্রতি মুহুর্তে, অসংখ্য, তাহলে সমস্যা নেই। ইংল্যান্ডের যৌনাচার অনেকটা আমাদের সিঙ্গাড়া সমসার মতোই।
আমার দেশে ভরদুপুরে কিংবা সন্ধ্যেবেলা সিঙ্গারা-সমসা খেলে কেউ যেমন কিছু বলে না, কেউ তাকিয়ে দেখে না, কেউ বলে না এই অসময়ে সিঙ্গারা খাচ্ছো কেন? অথবা লুকিয়ে খাচ্ছো না কেন?
গাই যদি দুধাল হয়, বাছুরকে যদি বশে রাখা যায়, তাহলে গোয়ালা নাকি হাটু পানিতেও দুধ দোহাতে পারে। অই দেশে আবার গাইকে দুধাল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায়ও থাকতে হয় না। গোয়ালা তার আগেই হাজির হয়।
অবাধ যৌনতার লীলাভূমি হচ্ছে ইংল্যান্ড। সেক্স সেদেশে কোনো মন্দ জিনিষ না।
সেই দেশেও যদি সেক্স ক্রাইম বা সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স নিয়ে কথা উঠে, তাহলে বুঝতে সমস্যা হয় না অবস্থা কত ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে। বিক্ষিপ্ত কিছু উদাহরণ পেশ করছি আমি। একটাও বানানো নয়। তাদেরই সরল স্বীকারোক্তি।
বয়স আঠার হয়ে গেলে মেয়েদের অবস্থা কেমন হয়, সেটা ব্যাখ্যা করে বুঝানোর ক্ষমতা নেই আমার।
আমি আন্ডার এইটটিন বাচ্ছা মেয়েদের কথা বলি। বাচ্ছা বলতে একদম বাচ্ছা। আমরা আমাদের দেশে যাদের বলি দুধের শিশু।
২০০৮/০৯ সালে ব্রিটেনে হাজারেরও বেশি মেয়ে যৌনতার শিকার হয়েছে, যাদের বয়স ৫ বছরেরও কম! বিশ্বাস হচ্ছে না? আমারও হতো না। কিন্তু আমার সামনে যে ডকুমেন্ট।
বিশ্বাস না করে উপায় কী?
ইংল্যান্ডের প্রভাবশালী দৈনিক দি সান পত্রিকার পুরোনো একটি কপি আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন তাজুল ভাই। শিরোনাম দেখেই আতকে উঠলাম আমি! ২৫ জানুয়ারি ২০১০ দি সান পরিবেশিত সংবাদটির শিরোনাম হলো,
60 Sex crimes on kid’s a day!
দিনে ৬০টি বাচ্ছা মেয়ে যৌনতার শিকার হচ্ছে। লক্ষ্য করার বিষয় হলো, সংবাদটির শিরোনামে Child শব্দটি ব্যবহার না করে বলা হয়েছে kid। অক্সফোর্ড ডিকশনারীর মতে kid মানে ছাগল ছানা।
ছাগল একটি নিরীহ পশু।
ব্রিটেনের সভ্যতা পশুত্বের পর্যায়ে চলে গেছে, এ কথা বুঝানোই The Sun এর উদ্দেশ্য কিনা-আমার জানা নেই। প্রকাশিত সংবাদটির কয়েকটি লাইন তুলে ধরছি।
Sixty Sex crimes are committed
against children every day....
The vast majority of cases
including rape. gross indicecy
and incestinvolved youngsters
aged tento 17. One in seven
victims was under ten and
1000 ware younger than five...
সংবাদটি পড়ে আমি আতকে উঠলাম। দিনে ৬০টি ঘটনা ঘটছে, এ কারণে নয়। এমন আদর্শ ঘটনাতো তাদের দেশে দিনে সম্ভবত ৬০ হাজারই ঘটছে।
আমি শিউরে উঠলাম বয়সের ব্যাখ্যা শুনে। পত্রিকাটি ২০০৮/০৯ সালের উপর গবেষণা চালিয়ে এই ভয়াবহ তথ্যটি আবিষ্কার করেছে।
এই সময়ে মোট ২১,৬১৮টি শিশু যৌন অপরাধের ঘটনা উদঘাটন করে তারা। যার গড় দিনে ৬০টি। এগুলোর অধিকাংশই ধর্ষণ।
অধিকাংশ বলতে প্রায় সবগুলোই। Majority মানে অধিকাংশ। মেজরিটির আগে Vast শব্দ জুড়ে দেয়া হয়েছে। ভাষ্ট মানে সুবৃহত্ত বা বিশাল। এদের বয়স ১০ থেকে ১৭।
প্রতি ৭ জনে একজন এমন, যার বয়স ১০ এর নিচে! এবং হাজার মেয়ে হলো ৫ বছরেরও কম বয়সী!
সভ্য জাতির সভ্যতার এই ভয়াবহ রূপ দেখে আমার গলা বুক পর্যন্ত শুকিয়ে গেল। আগেই জানানো হয়েছে দু'’জন রাজি হয়ে যা করে, সেটা অপরাধ নয়। অপরাধ হলো একপক্ষ নারাজ থাকলে। সুতরাং পরস্পর রাজিখুশি হয়ে যৌনতায় অভ্যস্থ মেয়েদের প্রকৃত সংখ্যা গুণে বের করা যাবে না। ওরা সভ্য জাতি।
আমি মনে মনে বললাম,আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা সভ্য নই।
৮ ফেব্র“য়ারি ২০১০ The sun এ প্রকাশিত আরেকটি সংবাদের শিরোনামে ছিলো আরো ভয়াবহ।
Pregenant at 10, দশ বছরে গর্ভবতি
বরকতি এই সংবাদটির শুরু হতে হয়েছে এভাবে,School girls as young as ten are getting pregnant...
বিস্তারিত ব্যাখ্যায় বলা হয়, ব্রিটেনে ১০ বছর বয়সী মেয়েরা গর্ভবতি হচ্ছে। পত্রিকাটি সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, ব্রিটেনে ৬০% মেয়ে গর্ভপাত ঘটাচ্ছে। এদের মধ্যে আন্ডার এজ মেয়েরাই বেশি।
এক বছরে প্রাইমারি স্কুলে পড়–য়া এমন ১৫টি মেয়ে পাওয়া গেছে, যাদের বয়স ১০ বছরের কম অথচ গর্ভবতি।
১১ বছর বয়সের গর্ভবতি মেয়ে পাওয়া গেছে ৩৯ জন।
১৩ বছরের ৩ শতাধিক।
২০০২ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ১৩ বছরের নিচে বয়স, এমন গর্ভবতি মেয়ের সংখ্যা ৬৩৪৮৭। যার দৈনিক গড় ২৩ জন।
স্কটল্যান্ডে সবচে’ কম বয়সী মা মুহ্তারামার বয়স ১২! তিনি ১১ বছর বয়সে গর্ভবতি হবার কৃতিত্ব দেখান। ১২ বছর বয়সে সন্তান জন্ম দেন। মা হন।
এ ব্যাপারে পত্রিকাটিরপক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফ্রেংক কিউরেডি জানান, চাইল্ড সেক্সের এই সংখ্যা খুবই দুঃখজনক।
ফ্যামিলি এডুকেশন টাষ্ট এর মুখপাত্র নরম্যান ওয়েলস এর কাছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এখানে অধিকাংশ প্রাইমারী স্কুলগুলোতে এখনো যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বাচ্চাদের সেখানো হয় না কখন তাদের সেক্সুয়ালি একটিভ হওয়া দরকার।
পর্যাপ্ত সেক্স গাইডলাইনের অভাবে এই ঘটনাগুলো ঘটছে। ”
আজব এক দেশ! আজব তাদের সভ্যতা! প্রাইমারী স্কুলের দুধের শিশু, যারা জীবনকেই এখনো বুঝতে শেখেনি, যৌন অনুভূতি যাদের কাছে অপরিচিত, তাদেরকে যথারীতি যৌনতা শিক্ষা দেয়া হবে। এর গুণগান ও ফজিলত বর্ণনা করে বুঝানো হবে। এরপর তাদেরকে একটি সময় নির্ধারণ করে বলে দেয়া হবে ---বছর বয়সের আগে তোমরা এই কাজ করো না। আর বাচ্চারা সেই বাণী বেদবাক্যের মতো মেনে বসে থাকবে!
হায়রে বিবেক!!!
...চলবে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।