ক্ষমতাসীন দলের দখলবাজ ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনের সংঘর্ষরত কর্মীদের সঙ্গে রাজধানীতে পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস এমনকি এক পর্যায়ে গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এ ঘটনায় ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন দখলবাজ। রাজধানীর চানখাঁরপুলের আনন্দবাজার মার্কেট দখলকে কেন্দ্র করে ত্রিমুখী সংঘর্ষে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ব্যবসায়ী ও ধারে-কাছের অধিবাসীদের মধ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলের উল্টো দিকে রেলের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠে আনন্দবাজার। এখানে শতাধিক দোকান রয়েছে। অবৈধ এই বাজারটি উচ্ছেদ করতে এগিয়ে আসে রেল কর্তৃপক্ষ। তাদের সঙ্গে ছিল পুলিশের পাশাপাশি ৭০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের শ্রমিক লীগ নেতারাও এ উচ্ছেদ অভিযানের সঙ্গী হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নামে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অজুহাতে অভিযান চালানো হলেও এর নেপথ্যে ছিল ৭০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের শ্রমিক লীগ নামধারীরা। আনন্দবাজারের কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে আনা ছিল তাদের উদ্দেশ্য। স্বভাবতই এ বাজার থেকে সুবিধাভোগকারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাতে বাধা দেয়। ফলে আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক লীগ নামধারীদের সঙ্গে শুরু হয় ছাত্রলীগ নামধারীদের সংঘর্ষ। এ সংঘর্ষে পুলিশ কার্যত বাধা প্রদানকারী ছাত্রলীগ নামধারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জের শিকারও হয় তারা। রেলের জায়গা দখল করে রাজধানীতে মার্কেট বানানোর ঘটনা নিঃসন্দেহে এক গর্হিত কাজ। এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। তবে এই উচ্ছেদের পেছনে মহৎ উদ্দেশ্যের বদলে পাল্টা দখলদারিত্বের মাহাত্দ্য যে কাজ করেছে তা প্রমাণিত হয় উচ্ছেদের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক লীগ নামধারীদের জড়িত থাকার ঘটনায়। গত পৌনে ৫ বছরে ক্ষমতাসীন সরকার বহু দিক থেকে কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্য দেখিয়েছে। তবে সে সাফল্য নিষ্প্রভ করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নামধারীদের কৃতিত্ব বিরোধী দলের চেয়ে অনেক বেশি। এরা যে সরকারের সহায় তাদের সর্বনাশ ডেকে আনার জন্য বিরোধী দলের কোনো প্রয়োজনই তো থাকার কথা নয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।