"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"
১
বলতে ইচ্ছে হয়-
ভাল আছো অনিন্দিতা! কানে দুল পরোনি আজ!
সেই যে একদিন - ভার্সিটির বাসটা ধরবো বলে আমি এসে
দাঁড়াতাম দেবদারু গাছটার নীচে, তুমি আসতে সবার আগে।
বাসে উঠে যেতে কোনদিকে না তাকিয়ে। আমি উঠতাম সবার
শেষে। বাসটা ছাড়ার আগে শুধু একবার তাকিয়ে দেখতে, আমি
আছি কিনা সেই বাসে! ক্লাশ থাকুক বা নাই থাকুক, তুমি জানতে
আমি এসে ঠিক দাঁড়াবো ওই গাছটার নীচে। তোমার দেখা পাবো
এই আশায় শুকনো দুটো চোখ ঘুমের তীব্র খরা উপেক্ষা করে
রোজ আমাকে টেনে নিতো যেতো সোনাদিঘীর মোড়ে।
আমি
ঘড়ির কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে, চটের ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে
ঠিক এসে যেতাম সকালের বাসটা ধরবো বলে। তোমাকে
দেখার প্রবল ইচ্ছেটা তখন রীতিমত অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গ্যাছে।
ভার্সিটির ক্লাশের চেয়ে তোমার টানটাই বেশী ছিল, বুঝেছিলাম
নিজেকে প্রশ্ন করে। তুমি মুখে না বললেও সবকিছু ঠিকই বুঝতে।
২
বলতে ইচ্ছে হয়-
ভাল আছো অনিন্দিতা! কপালে টিপ পরোনি আজ!
সেই যে একদিন- ভার্সিটি যাওয়া আসার পথে নিয়মিত দেখা
হতো তোমার আমার।
সোনাদিঘী মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা দেবদারু
গাছটা নির্বিকার তাকিয়ে দেখতো আমাদের যাওয়া আসা। খুব
মায়া হতো বুড়ো গাছটাকে দেখে। অসংখ্য পেরেক ঠুকা ছোট
ছোট বিজ্ঞাপণের আড়ালে কত কষ্ট আর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে কী
যেন বলতে চাইতো আমাকে। কষ্টের ক্ষতগুলো জমে থাকতো
গাছটার শরীরে। বোবা গাছটা নির্বাক তাকিয়ে দেখতো আমাদের
গাঢ় সবুজ ভালবাসা।
গাছটা কী আজও ঠিক তেমনি দাঁড়িয়ে আছে
তার জড়াজীর্ণ দেহটা নিয়ে? নাকি আরও বেশী বিবর্ণ হয়ে গ্যাছে
সময়ের ব্যবধানে? এমনও হতে পারে এসিড বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ পুড়ে
গ্যছে গাছটা! কিংবা রাস্তার জঞ্জাল ভেবে কোন অসহিষ্ণু ঠিকাদার
একদিন কেটে ফেলেছে আমার নিত্য দেখা সেই দেবদারু গাছটা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।