"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"
অনিন্দিতা,
কী ভীষণ চাপা ছিলে তুমি!
কলা ভবনের করিডোরে দাঁড়িয়ে আমি, হঠাত্ লীনা এগিয়ে এসে বললো-
"কি অবাক কান্ড! আপনিতো দেখছি সাংঘাতিক মানুষ! চিরতা'র ডালে
যষ্ঠ্যি মধু লাগালেন কবে! কি ভাবে গলালেন অমন কষ্ঠি পাথর হৃদয়-
ওরে বাবা! তলে তলে এতদূর"! হেসে বললাম, "রাকসু'র সাহিত্য
আসরে আপনিওতো ছিলেন সবার সাথে! আপনার প্রিয় বান্ধবী আমার
কবিতা, বক্তৃতা, আবৃত্তি শুনে অমন কুপোকাত হবে তা কে জানতো?
চিরতা দেবী কিন্তু সবার আড়ালে আমাকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি।
সেই থেকে শুরু। ফাগুনে ফাগুনে কেটে গেল আরও একটা বছর। দিন
গড়াতে লাগলো এমনি করেই। একটা দুটো করে তোমার চিরকুট সংখ্যা
বাড়তে থাকে।
মোট সতেরোটা চিরকুট পেলাম লীনার হাত দিয়ে। অথচ
কোনটাই দু'লাইনের বেশী নয়-
- "আজকে দেখা করতে পারবো না, বিশেষ অসুবিধা আছে, কিছু মনে করোনা প্লীজ"।
- "শাড়ী পড়ে ভার্সিটি যেতে ভীষণ লজ্জা লাগে, ফালতু অমন জেদ করোনাতো"।
- "এই রে! গোস্সা করলেন নাকি বাবু মশাই? সামনে এলে কী কান ধরে দাঁড়াতে হবে"?
- "আজ ভার্সিটি যাচিছ না- মা'র শরীরটা তেমন ভাল নেই, আমাকেই রান্না করতে হবে"।
_ "যখন তখন বাসায় ফোন করোনাতো- অস্বস্তি লাগে, সবাই কি ভাববে সেদিকে খেয়াল আছে"?
ইত্যাদি ইত্যাদি ছোট্ট সব কথার ফুলঝুরি।
ভাঁজ খুলে চিরকুটগুলো পড়তাম বার বার।
ময়লা, ঘামে নেতিয়ে গেলেও কুবেরের ধন হয়েই ছিল আমার কাছে।
অপ্রকাশিত উপন্যাসের খন্ড খন্ড বাক্য। কোন সম্বোধন নেই- কোন ইতি
নেই। শুধু নেতি কথায় ভরপুর নেহায়েত কিছু চিরকুট।
মুক্তোর মতো
এক একটা অক্ষরে লেখা। রোমান্টিক কোন প্রেমের কথা নয়। অথচ
লেখার উপর হাত বোলাতাম সযতনে। আদরের আতিশয্যে আরও বেশী
নেতিয়ে পড়তো আমার অসম্ভব প্রিয় সেই ছোট্ট কাগজের চিরকুটগুলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।